আপনি যদি আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় করেন এবং তাঁর প্রতি দায়িত্ব পালন করেন তবে এই পুরস্কারগুলো পাবেনঃ
১। তিনি আপনাকে প্রত্যেক সমস্যা হতে বের হয়ে আসার উপায় করে দিবেন।
২। তিনি আপনাকে এমন উৎস হতে রিযিক দিবেন যা আপনি কল্পনাও করেননি।
৩। তিনি আপনার সব বিষয় সহজ করে দিবেন।
৪। তিনি আপনার পাপসমুহ মোচন করে দিবেন এবং আপনার পুরস্কার বৃদ্ধি করে দিবেন।
আপনি আল্লাহ তা‘আলার উপর ভরসা করলেঃ
১। তিনিই আপনার জন্য যথেষ্ঠ হবেন।
২। নিঃশ্চয়ই তিনি আপনার ইচ্ছা পুরণ করবেন
আল্লাহ তা‘আলা বলেছেনঃ
وَمَن يَتَّقِ اللَّهَ يَجْعَل لَّهُ مَخْرَجاً
• আর যে আল্লাহকে ভয় করে ও তার প্রতি দায়িত্ব পালন করে (তাহলে) তিনি তার জন্য (প্রত্যেক সমস্যা হতে) বের হয়ে আসার উপায় করে দিবেন। (সুরা আত-তালাক ৬৫:২)
وَيَرْزُقْهُ مِنْ حَيْثُ لاَ يَحْتَسِبُ
• আর তিনি তাকে এমন উৎস হতে রিযিক দিবেন যা সে কল্পনাও করতে পারেনি।(সুরা আত-তালাক ৬৫:৩)
وَمَن يَتَّقِ اللَّهَ يَجْعَل لَّهُ مِنْ أَمْرِهِ يُسْراً
আর যে আল্লাহকে ভয় করে ও তাঁর প্রতি দায়িত্ব পালন করে তিনি তার (সব) বিষয় সহজ করে দিবেন। (সুরা আত-তালাক ৬৫:৪)
وَمَن يَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ فَهُوَ حَسْبُهُ إِنَّ اللَّهَ بَـلِغُ أَمْرِهِ قَدْ جَعَلَ اللَّهُ لِكُلِّ شَىْءٍ قَدْراً
• আর যে আল্লাহর উপর ভরসা রাখে, তাহলে তার জন্য তিনিই যথেষ্ঠ হবেন। নিঃশ্চয়ই তিনি তার ইচ্ছা পুরণ করবেন। সত্যি আল্লাহ সব কিছুর মাত্রা নির্ধারন করে রেখেছেন। (সুরা আত-তালাক ৬৫:৩)
পবিত্র কুরআন এক পরিপূর্ণ বরকতময় কিতাব। পরকালে বিশ্বাসীরা এই কুরআনকে বিশ্বাস করে এবং কুরআনে বিশ্বাসীরাই তাদের সালাতকে সর্বদা হেফাজত করে। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন: وَهَـذَا كِتَـبٌ أَنزَلْنَـهُ مُبَارَكٌ مُّصَدِّقُ الَّذِى بَيْنَ يَدَيْهِ وَلِتُنذِرَ أُمَّ الْقُرَى وَمَنْ حَوْلَهَا وَالَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِالاٌّخِرَةِ يُؤْمِنُونَ بِهِ وَهُمْ عَلَى صَلاَتِهِمْ يُحَافِظُونَ আর ইহা এক কিতাব, আমরা ইহাকে পাঠিয়েছি; পরিপূর্ণ বরকতময়, ইহা সত্যায়ন করে যা ইহার পুর্বে নাজিল হয়েছে যাতে আপনি (হে মুহাম্মাদ সাঃ) সতর্ক করতে পারেন কেন্দ্রীয় শহরবাসীদেরকে (মক্কাবাসীদেরকে) এবং ইহার আশে-পাশে যারা রয়েছে। আর যারা পরকালে বিশ্বাস করে তারাই ইহাকে (কুরআনকে) বিশ্বাস করে। আর তারা তাদের সালাতের ব্যাপারে সদা হেফাজতকারী। সুরাহ আল-আন‘আম ৬:৯২
আল্লাহ তা‘আলা বলেছেনঃ يَـبَنِى آدَمَ لاَ يَفْتِنَنَّكُمُ الشَّيْطَـنُ كَمَآ أَخْرَجَ أَبَوَيْكُم مِّنَ الْجَنَّةِ يَنزِعُ عَنْهُمَا لِبَاسَهُمَا لِيُرِيَهُمَا سَوْءَتِهِمَآ إِنَّهُ يَرَاكُمْ هُوَ وَقَبِيلُهُ مِنْ حَيْثُ لاَ تَرَوْنَهُمْ إِنَّا جَعَلْنَا الشَّيَـطِينَ أَوْلِيَآءَ لِلَّذِينَ لاَ يُؤْمِنُونَ হে আদম সন্তানেরা! শয়তান যেন তোমাদেরকে ধোঁকা দিতে না পারে যেরূপ সে বের করে এনেছিল তোমাদের পিতা-মাতাকে জান্নাত থেকে, খুলেফেলেছিল তাদের থেকে তাদের পোশাক যাতে সে তাদেরকে তাদের গোপনাঙ্গ দেখাতে পারে। নিঃশ্চয়ই সে এবং ‘কাবিলুহু‘ (জিনদের মধ্য থেকে তার সৈন্য অথবা তার গোত্র) তোমাদেরকে এমন জায়গা থেকে দেখতে পারে তোমরা তাদেরকে দেখতে পারনা। নিঃশ্চয়ই আমরা শয়তানদেরকে তাদের জন্য আওলিয়া‘ (রক্ষক ও সাহায্যকারী) বানিয়েছি যারা বিশ্বাস করেনা। সুরাহ আল-আরাফ ৭:২৭
দ্বীন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবেননা। আল্লাহ তা‘আলাকে ভালবাসুন, মু‘মিনদের প্রতি সদয় হোন এবং কাফিরদের প্রতি কঠোর হোন। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করুন এবং নিন্দুকের নিন্দাকে ভয় করবেন না। অন্যথায় আল্লাহ তা‘আলা আপনাদের পরিবর্তে এমন লোকদেরকে আনবেন যাদেরকে আল্লাহ ভালবাসবেন এবং তারাও তাঁকে ভালবাসবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেনঃ يأَيُّهَا الَّذِينَ ءَامَنُواْ مَن يَرْتَدَّ مِنكُمْ عَن دِينِهِ فَسَوْفَ يَأْتِى اللَّهُ بِقَوْمٍ يُحِبُّهُمْ وَيُحِبُّونَهُ أَذِلَّةٍ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ أَعِزَّةٍ عَلَى الْكَـفِرِينَ يُجَـهِدُونَ فِى سَبِيلِ اللَّهِ وَلاَ يَخَـفُونَ لَوْمَةَ لائِمٍ ذلِكَ فَضْلُ اللَّهِ يُؤْتِيهِ مَن يَشَآءُ وَاللَّهُ وَسِعٌ عَلِيمٌ হে ঈমানদারগণ! তোমাদের মধ্যে যে তার দ্বীন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে, আল্লাহ (তার পরিবর্তে) এমন লোকদেরকে আনবেন যাদেরেকে তিনি ভালবাসবেন এবং তারাও তাঁকে ভালবাসবে, যারা হবে মু‘মিনদের প্রতি বিনয়ী, কাফিরদের প্রতি কঠোর, যারা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করবে এবং নিন্দুকের নিন্দাকে ভয় করবেনা। উহা আল্লাহর অনুগ্রহ তিনি যাকে ইচ্ছা তা দান করেন। আর আল্লাহ তাঁর সৃষ্টির প্রয়োজনের জন্য যথেষ্ট, সব-জান্তা। সুরাহ আল-মা‘ইদা ৫:৫৪
আল্লাহ তা‘আলা আদেশ করেছেন আমাদের নিজেদেরকে ও আমাদের পরিবারবর্গকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করতে। ইসলামের জ্ঞান অর্জন এবং সেই জ্ঞানের বাস্তব আমল ছাড়া তাঁর এই আদেশ পালন করা সম্ভব নয়। কাজেই আসুন আমরা আমাদের নিজেদেরকে ও আমাদের ছেলেমেয়েদেরকে ইসলামের জ্ঞানে পারদর্শী করে তুলি যাতে আল্লাহ তা‘আলার এই আদেশটি পালন করতে পারি। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন: أَيُّهَا الَّذِينَ ءَامَنُواْ قُواْ أَنفُسَكُمْ وَأَهْلِيكُمْ نَاراً وَقُودُهَا النَّاسُ وَالْحِجَارَةُ عَلَيْهَا مَلَـئِكَةٌ غِلاَظٌ شِدَادٌ لاَّ يَعْصُونَ اللَّهَ مَآ أَمَرَهُمْ وَيَفْعَلُونَ مَا يُؤْمَرُونَ হে ঈমানদারগণ! তোমরা তোমাদের নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবারবর্গকে আগুন (জাহান্নাম) থেকে বাঁচাও যার জ্বালানি হচ্ছে মানুষ ও পাথর, (এবং) যার উপর (নিযুক্ত) রয়েছে নির্মম-হৃদয়, শক্তিশালী ও ভীতিকর ফেরেস্তাগণ যারা আল্লাহ যা আদেশ করেন তা অমান্য করেনা বরঞ্চ যা করতে বলেন তাই করে। সুরাহ আত-তাহরিম ৬৬:৬
মানুষের সবচেয়ে বড় দুটি দূর্বলতা হচ্ছেঃ
১। চিরকাল বেচে থাকার লোভ
২। ক্ষমতার লোভ
ইবলিস ভাল করেই জানতো আদমের (আঃ) এই দূর্বলতাগুলোর কথা। তাই সে আদমকে (আঃ) এই দুটি লোভ দেখিয়ে প্রলোভিত করেছিল এবং আদম (আঃ) সেই লোভে পড়ে আল্লাহ তা‘আলাকে অমান্য করেছিলেন।
আল্লাহ তা‘আলা বলেছেনঃ
فَوَسْوَسَ إِلَيْهِ الشَّيْطَـنُ قَالَ يـَادَمُ هَلْ أَدُلُّكَ عَلَى شَجَرَةِ الْخُلْدِ وَمُلْكٍ لاَّ يَبْلَى
২০ঃ১২০ অতপর শয়তান তাকে ফিসফিস করে বলেছিল, “হে আদম! আমি কি তোমাকে চালিত করবো অনন্ত জীবন দানকারী গাছটির দিকে ও এমন এক রাজত্বের দিকে যার কোন ক্ষয় নেই?“
فَأَكَلاَ مِنْهَا فَبَدَتْ لَهُمَا سَوْءَتُهُمَا وَطَفِقَا يَخْصِفَانِ عَلَيْهِمَا مِن وَرَقِ الْجَنَّةِ وَعَصَى ءَادَمُ رَبَّهُ فَغَوَى
20ঃ১২১ অতপর তারা ঊভয়ে ইহা (গাছটি) থেকে খেয়েছিল। ফলে তাদের নিকট প্রকাশ হয়ে পড়েছিল উভয়ের গোপনাঙ্গ এবং তারা নিজেদেরকে জান্নাতের পাতা দ্বারা ঢাকতে শুরু করেছিল। এভাবে আদম তার রাব্বকে অমান্য করেছিল এবং ফলে সে হয়েছিল বিপথগামী ।
সুরাহ তা-হা ২০ঃ১২০-১২১
ইয়া আল্লাহ! আমাদেরকে শয়তানের প্রলোভন থেকে রক্ষা করুন।
আপনি সত্যিকার মু‘মিন হলেঃ
আপনার হৃদয়ে ভয়ের সঞ্চার হয় যখন আপনি আল্লাহর আদেশ নিষেধের কথা শুনেন
কুরআনের আয়াত পাঠ করে শুনানো হলে আপনার ঈমান বেড়ে যায় এবং তখন আপনি একমাত্র আল্লাহর উপর ভরসা করেন
আপনি সালাত আদায় করেন
আল্লাহ আপনাকে যে রিঝিক দিয়েছেন তা থেকে আপনি ইসলামের বিধান অনুযায়ী ব্যয় করেন (অর্থাৎ যাকাত, সাদাকা দেন এবং ছেলেমেয়ে, স্ত্রী, ভাইবোন, বাপ-মা ইত্যাদির জন্য ব্যয় করেন।)
যাদের মধ্যে উপরোক্ত গুণাবলীগুলো রয়েছে তাদেরকে আল্লাহ তা‘আলা সত্যিকার ঈমানদার হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেনঃ
إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ الَّذِينَ إِذَا ذُكِرَ اللَّهُ وَجِلَتْ قُلُوبُهُمْ وَإِذَا تُلِيَتْ عَلَيْهِمْ ءَايَـتُهُ زَادَتْهُمْ إِيمَـناً وَعَلَى رَبِّهِمْ يَتَوَكَّلُونَ
৮:২ মু‘মিনতো শুধু তারাই যারা, যখন আল্লাহর নাম উল্লেখ করা হয়, তখন তারা তাদের অন্তরে এক ভয় অনুভব করে এবং যখন তাঁর আয়াতসমুহ (এই কুরআন থেকে) পাঠ করা হয়, ইহা তাদের ঈমান বাড়িয়ে দেয় এবং তারা তাদের রাব্বের উপর ভরসা করে;
الَّذِينَ يُقِيمُونَ الصَّلَوةَ وَمِمَّا رَزَقْنَـهُمْ يُنفِقُونَ
৮:৩ তারা সালাত আদায় করে এবং আমরা তাদেরকে যা দিয়েছি তা থেকে তারা ব্যয় করে;
أُوْلـئِكَ هُمُ الْمُؤْمِنُونَ حَقّاً لَّهُمْ دَرَجَـتٌ عِندَ رَبِّهِمْ وَمَغْفِرَةٌ وَرِزْقٌ كَرِيمٌ
৮:৪ উহারাই সত্যিকার মু‘মিন। তাদের জন্য তাদের রাব্বের সাথে রয়েছে মর্যাদার স্তর, ক্ষমা এবং সম্মানীত রিযিক।
সুরাহ আল-আনফাল ৮:২-৪
যাদের নিয়মিত নফল সিয়াম পালনের অভ্যাস নেই তাদের জন্য মধ্য শা‘বানের পর থেকে রমজানের পূর্ব পর্যন্ত সিয়াম পালন করা মানা করা হয়েছে। তবে যাদের অভ্যাস আছে তারা মধ্য শা‘বানের পর থেকে সিয়াম পালন করতে পারবে।
রাসুল (সাঃ) বলেছেনঃ
রামজানের দুই-একদিন আগে সিয়াম পালন করোনা। কিন্তু কেউ যদি কোন এক নির্দিষ্ট দিনে সিয়াম পালনে অভ্যস্ত থাকে (যেমন সোমবার বা বৃহসপতিবার ইত্যাতি) , তবে সে ঐদিন সিয়াম পালন করতে পারে। (দারুসসালাম প্রকাশিত রিয়াদুসসালিহীন হাদিস নং ১২২৪)
রমজানের পুর্বে সিয়াম পালন করোনা। চাঁদ দেখে সিয়াম পালন কর এবং চাঁদ দেখে ইহা ছেড়ে দাও। কিন্তু যদি আকাশ মেঘলা থাকে তবে (শা‘বানের) ত্রিশ দিন পুর্ণ কর। (দারুসসালাম প্রকাশিত রিয়াদুসসালিহীন হাদিস নং ১২২৫)
যখন শা‘বানের অর্ধেক বাকি থাকে তখন সিয়াম পালন করোনা। (দারুসসালাম প্রকাশিত রিয়াদুসসালিহীন হাদিস নং ১২২৬)
যেহেতু শা‘বান মাসে আল্লাহ তা‘আলার নিকট মানুষের আমল পেশ করা হয় সেই জন্য রাসুল (সাঃ) প্রায় পুরো শা‘বান মাসই সিয়াম পালন করতেন।
আয়শা (রাঃ) বর্ণনা করেছেনঃ
রাসুল (সাঃ) শা‘বান মাসে যে রকম প্রায়ই নফল সিয়াম পালন করতেন তা অন্য কোন মাসে করতেন না। তিনি পুরো শা‘বান মাস ধরে সিয়াম পালন করতেন। (দারুসসালাম প্রকাশিত রিয়াদুসসালিহীন হাদিস নং ১২৪৭)
অন্য বর্ণনা অনুযায়ীঃ রাসুল (সাঃ) কয়েকদিন ব্যতিত পুরো শা‘বান মাস সিয়াম পালন করতেন। (দারুসসালাম প্রকাশিত রিয়াদুসসালিহীন হাদিস নং ১২৪৭)
কাজেই যাদের অভ্যাস আছে তারা শা‘বানের প্রায় সব দিনই সিয়াম পালন করতে পারবে। কিন্তু যাদের অভ্যাস নেই তারা শুধু মধ্য শা‘বান পর্যন্ত সিয়াম পালন করবে।
আলহামদুলিল্লাহ!
রমজান প্রায় এসে গেলো!
এ মাসে সিয়াম পালনের ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলার আদেশগুলো জেনে নেইঃ
সিয়াম পালন করা ফরজ। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেনঃ
﴿يأَيُّهَا الَّذِينَ ءَامَنُواْ كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِن قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ﴾
হে ঈমানদারগণ! তোমাদের জন্য আস-সাউম ফরজ করা হলো যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের জন্য - যাতে তোমরা আল-মুত্তাকুন হতে পার।
সুরাহ আল-বাকারাহ ২:১৮৩
চাঁদ দেখে সিয়াম পালন করতে হবে এবং অসুস্থতা বা ভ্রমণের কারণে সিয়াম বাদ পড়লে তা পরবর্তীতে করে নিতে হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেনঃ
﴿شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِى أُنزِلَ فِيهِ الْقُرْآنُ هُدًى لِّلنَّاسِ وَبَيِّنَـتٍ مِّنَ الْهُدَى وَالْفُرْقَانِ فَمَن شَهِدَ مِنكُمُ الشَّهْرَ فَلْيَصُمْهُ وَمَن كَانَ مَرِيضًا أَوْ عَلَى سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِّنْ أَيَّامٍ أُخَرَ يُرِيدُ اللَّهُ بِكُمُ الْيُسْرَ وَلاَ يُرِيدُ بِكُمُ الْعُسْرَ وَلِتُكْمِلُواْ الْعِدَّةَ وَلِتُكَبِّرُواْ اللَّهَ عَلَى مَا هَدَاكُمْ وَلَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ﴾
রমজান সেই মাস যেখানে নাজিল করা হয়েছিল কুরআন, যা মানব জাতির জন্য এক পথ প্রদর্শক এবং সুস্পষ্ট প্রমাণ সঠিক পথের জন্য ও সত্য-মিথ্যা পৃথক করার জন্য। কাজেই তোমাদের যেকেউ (রমজান) মাস (অর্থাৎ মাসের প্রথম রাতে চাঁদ) প্রত্যক্ষ করবে তাকে অবশ্যই ইহাতে (সেই মাসে) সিয়াম রাখতে হবে। কিন্তু তোমাদের কেউ যদি অসুস্থ অথবা ভ্রমণে থাকে তবে সমান সংখ্যক (দিনগুলো সিয়াম রেখে পুর্ণ করতে হবে) অন্য দিনগুলো থেকে। তোমাদের জন্য আল্লাহ চান সহজসাধ্যতা এবং তিনি তোমাদের জন্য কোন কিছু কঠিন করতে চাননা। (তিনি চান যে তোমরা) অবশ্যই পুরণ করবে সমান সংখ্যক (দিনগুলো) এবং অবশ্যই আল্লাহর বড়ত্ব (মহত্ব) ঘোষণা করবে (অর্থাৎ তাকবির মানে আল্লাহু আকবার বলতে পার) তোমাদেরকে হেদায়েত দেয়ার জন্য; যাতে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পার।
সুরাহ আল-বাকারাহ ২:১৮৫
রমজান মাসে স্ত্রী সহবাসের বিধান। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেনঃ
﴿أُحِلَّ لَكُمْ لَيْلَةَ الصِّيَامِ الرَّفَثُ إِلَى نِسَآئِكُمْ هُنَّ لِبَاسٌ لَّكُمْ وَأَنتُمْ لِبَاسٌ لَّهُنَّ عَلِمَ اللَّهُ أَنَّكُمْ كُنتُمْ تَخْتانُونَ أَنفُسَكُمْ فَتَابَ عَلَيْكُمْ وَعَفَا عَنكُمْ فَالـنَ بَـشِرُوهُنَّ وَابْتَغُواْ مَا كَتَبَ اللَّهُ لَكُمْ وَكُلُواْ وَاشْرَبُواْ حَتَّى يَتَبَيَّنَ لَكُمُ الْخَيْطُ الأَبْيَضُ مِنَ الْخَيْطِ الأَسْوَدِ مِنَ الْفَجْرِ ثُمَّ أَتِمُّواْ الصِّيَامَ إِلَى الَّيْلِ وَلاَ تُبَـشِرُوهُنَّ وَأَنتُمْ عَـكِفُونَ فِي الْمَسَـجِدِ تِلْكَ حُدُودُ اللَّهِ فَلاَ تَقْرَبُوهَا كَذلِكَ يُبَيِّنُ اللَّهُ آيَاتِهِ لِلنَّاسِ لَعَلَّهُمْ يَتَّقُونَ﴾
রমজানের রাতে তোমাদের স্ত্রীদের সাথে যৌন মিলন তোমাদের জন্য বৈধ করা হলো। তারা তোমাদের জন্য লিবাস (শরীরের আবরণ বা পর্দা বা সাকান অর্থাৎ যাদের সঙ্গ তোমাদেরকে সন্তুষ্ট করে) এবং তোমরাও তাদের জন্য লিবাস। আল্লাহ জানেন যে তোমরা নিজেদেরকে ধোকা দিতে। কাজেই তিনি তোমাদের দিকে ফিরেছেন (অর্থাৎ তোমাদের তাওবা কবুল করেছেন) এবং তোমাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। কাজেই এখন তাদের সাথে যৌন মিলন কর এবং আল্লাহ তোমাদের জন্য যা নির্ধারিত করেছেন (অর্থাৎ সন্তান) তা আশা কর । আর ততক্ষন পর্যন্ত খাও ও পান কর যতক্ষণনা ভোরের (ফাজরের) সাদা রেখা তোমাদের নিকট (অন্ধকারের) কাল রেখা থেকে সুস্পষ্ট হয়ে দেখা দেয়। তারপর রাত হওয়া পর্যন্ত তোমাদের সিয়াম পুর্ণ কর। আর তোমরা মাসজিদে ই‘তিকাফে থাকা কালে তাদের সাথে (অর্থাৎ তোমাদের স্ত্রীদের সাথে) যৌন মিলন করোনা। এসব হচ্ছে আল্লাহর হুদুদ (নির্ধারিত সীমা অর্থাৎ বিধি-নিষেধ); কাজেই ইহার ধারে-কাছে যেওনা। এভাবেই আল্লাহ তাঁর আয়াত (প্রমাণ, দলিল, নিদর্শন, শিক্ষা, ওহী ইত্যাদি) মানবজাতির জন্য সুস্পষ্ট করে দেন যাতে তারা আল-মুত্তাকুন হতে পারে।
সুরাহ আল-বাকারাহ ২:১৮৭
আপনি মু‘মিন হলে আপনি কখনও সেইসব লোকদের সাথে বন্ধুত্ব করবেন না যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের বিরুদ্ধাচারণ করে। অথচ দুঃখের সাথে বলতে হয় আজ এক শ্রেণীর আলিমরা সেইসব শাসকদেরকে বা ক্ষমতাবানদেরকে ভালবাসতেছে বা তাদের পক্ষ নিয়ে কথা বলতেছে যারা সরাসরি আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের বিরুদ্ধাচারণ করতেছে ইসলামের বিধানের বিরুদ্ধাচারণের মাধ্যমে অথবা ইসলামের বিধানের পরিবর্তে নিজস্ব বিধান তৈরী করার মাধ্যমে। আর এসব আলিমদের অনুসারীর সংখ্যা লাখ লাখ যুবক ছেলেমেয়ে। কিন্তু যারা আল্লাহর দল তারা কখনই আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের বিরুদ্ধাচারীদেরকে বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করবেনা, তাদের প্রতি কোন স্নেহ, মমতা ও ভালবাসা দেখাবেনা। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন: لاَّ تَجِدُ قَوْماً يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الاٌّخِرِ يُوَآدُّونَ مَنْ حَآدَّ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَلَوْ كَانُواْ ءَابَآءَهُمْ أَوْ أَبْنَآءَهُمْ أَوْ إِخْوَنَهُمْ أَوْ عَشِيرَتَهُمْ أُوْلَـئِكَ كَتَبَ فِى قُلُوبِهِمُ الإِيمَـنَ وَأَيَّدَهُمْ بِرُوحٍ مِّنْهُ وَيُدْخِلُهُمْ جَنَّـتٍ تَجْرِى مِن تَحْتِهَا الاٌّنْهَـرُ خَـلِدِينَ فِيهَا رَضِىَ اللَّهُ عَنْهُمْ وَرَضُواْ عَنْهُ أُوْلَـئِكَ حِزْبُ اللَّهِ أَلاَ إِنَّ حِزْبَ اللَّهِ هُمُ الْمُفْلِحُونَ (হে মুহাম্মাদ সাঃ) আপনি এমন কোন লোক পাবেন না যারা আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করে অথচ সেই সমস্ত লোকদের সাথে বন্ধুত্ব করে যারা আল্লাহ ও রাসুলের বিরোধিতা করে; হোক না তারা (বিরোধিতাকারীরা) তাদের পিতা অথবা তাদের পুত্র অথবা তাদের ভাই অথবা তাদের নিকটাত্বীয়। ওদের জন্য তিনি তাদের হৃদয়ে ঈমান লিখে দিয়েছেন এবং তাদেরকে তিনি তাঁর নিজ থেকে রুহ্ (প্রমাণ, আলো ও সত্য হেদায়েত) দ্বারা শক্তিশালী করে দিয়েছেন । আর আমরা তাদেরকে এমন জান্নাতে প্রবেশ করাবো যার তলদেশ দিয়ে প্রবাহিত হয় নদীসমূহ। সেখানে তারা চিরকাল বাস করবে। আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট তারাও আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট। উহারাই আল্লাহর দল। হ্যাঁ, নিঃশ্চয়ই আল্লাহর দল, তারাই হবে সফলকাম। সুরাহ আল-মুজাদিলাহ ৫৮:২২
আপনি যে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদকে অপছন্দ করবেন তা আল্লাহ তা‘আলা আগেই বলেদিয়েছেন। অথচ উহা আপনার জন্য উত্তম হতো যদি আপনি তা করতেন আপনার জীবন ও আপনার ধন-সম্পদ দিয়ে। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেনঃ ﴿كُتِبَ عَلَيْكُمُ الْقِتَالُ وَهُوَ كُرْهٌ لَّكُمْ وَعَسَى أَن تَكْرَهُواْ شَيْئًا وَهُوَ خَيْرٌ لَّكُمْ وَعَسَى أَن تُحِبُّواْ شَيْئًا وَهُوَ شَرٌّ لَّكُمْ وَاللَّهُ يَعْلَمُ وَأَنتُمْ لاَ تَعْلَمُونَ﴾ ২:২১৬ কিতাল (অর্থাৎ আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ) তোমাদের জন্য বাধ্যতামুলক করা হলো যদিও তোমরা তা অপছন্দ কর। আর ইহা সম্ভব যে তোমরা এমন কিছুকে অপছন্দ কর যা তোমাদের জন্য ভাল এবং ইহা সম্ভব যে তোমরা এমন কিছুকে পছন্দ কর যা তোমাদের জন্য ক্ষতিকর। আল্লাহ জানেন (তোমাদের জন্য কি ভাল এবং কি মন্দ) কিন্তু তোমরা জাননা। সুরাহ বাকারাহ ২:২১৬ আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেছেনঃ يأَيُّهَا الَّذِينَ ءَامَنُواْ هَلْ أَدُلُّكمْ عَلَى تِجَـرَةٍ تُنجِيكُم مِّنْ عَذَابٍ أَلِيمٍ ৬১:১০. হে ঈমানদারগণ! তোমাদের কি সেই বানিজ্যের দিকে পথ দেখাব যা তোমাদেরকে এক যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে? تُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَتُجَـهِدُونَ فِى سَبِيلِ اللَّهِ بِأَمْوَلِكُمْ وَأَنفُسِكُمْ ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ ৬১:১১. (তা হচ্ছে) তোমরা বিশ্বাস কর আল্লাহকে এবং তাঁর রাসুলকে আর জিহাদ কর আল্লাহর রাস্তায় তোমাদের ধন-সম্পদ ও তোমাদের নিজেদের জীবন দিয়ে। উহাই তোমাদের জন্য উত্তম যদি তোমরা জানতে। يَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ وَيُدْخِلْكُمْ جَنَّـتٍ تَجْرِى مِن تَحْتِهَا الاٌّنْهَـرُ وَمَسَـكِنَ طَيِّبَةً فِى جَنَّـتِ عَدْنٍ ذَلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ ৬১:১২. (এরূপ করলে) তিনি তোমাদের গুণাহসমুহ ক্ষমা করে দিবেন এবং তোমাদেরকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতে যার তলদেশ দিয়ে প্রবাহিত হয় নদীসমুহ। আর দিবেন চীরস্হায়ী (আদন) জান্নাতে মনোরম প্রাসাদ। উহা প্রকৃতই এক চরম সফলতা। وَأُخْرَى تُحِبُّونَهَا نَصْرٌ مِّن اللَّهِ وَفَتْحٌ قَرِيبٌ وَبَشِّرِ الْمُؤْمِنِينَ ৬১:১৩. আর (তিনি আরও দিবেন) অন্য এক (কল্যাণ) যা তোমরা ভালবাস- (তা হচ্ছে) তোমাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে সাহায্য এবং এক আসন্ন বিজয়। কাজেই মু’মিনদের সুসংবাদ দাও। সুরাহ আস-সাফ ৬১:১০-১৩
আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ (জিহাদ) করাকে ইসলামে সর্বাদিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে এবং ইহা ইসলামের সর্বোচ্চ চুড়া। জিহাদের দ্বারা ইসলামকে করা হয় প্রতিষ্ঠিত, আল্লাহর কালিমাকে (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহকে) করা হয় সর্বোচ্চ এবং প্রচার করা হয় তাঁর ধর্ম। জিহাদ পরিত্যাগের মাধ্যমে ইসলাম ধ্বংশ হয়ে যায় এবং মুসলিমরা পতিত হয় নিকৃষ্ট অবস্থানে; তাদের সম্মান যায় হারিয়ে, তাদের ভুমি চলে যায় শত্রুদের দখলে আর উধাও হয়ে যায় তাদের শাসন ও কর্তৃত্ত (হায়! আজকে মুসলিমদের সেই করুণ অবস্থা)। জিহাদ প্রত্যেক মুসলিমের জন্য এক ফরজ দায়িত্ব। যে এই দায়িত্ব এড়িয়ে চলে অথবা যার হৃদয়ে এই দায়িত্ব পালনের এতটুকু ইচ্ছাও পোষণ করেনা সে মৃত্যুবরণ করে মুনাফিকের একটি চরিত্র নিয়ে। আল্লাহ তা‘আলা জিহাদকে ফরজ করে দিয়ে বলেছেনঃ كُتِبَ عَلَيْكُمُ الْقِتَالُ وَهُوَ كُرْهٌ لَّكُمْ وَعَسَى أَن تَكْرَهُواْ شَيْئًا وَهُوَ خَيْرٌ لَّكُمْ وَعَسَى أَن تُحِبُّواْ شَيْئًا وَهُوَ شَرٌّ لَّكُمْ وَاللَّهُ يَعْلَمُ وَأَنتُمْ لاَ تَعْلَمُونَ ২:২১৬. কিতাল (অর্থাৎ আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ) তোমাদের জন্য বাধ্যতামুলক করা হলো যদিও তোমরা তা অপছন্দ কর। আর ইহা সম্ভব যে তোমরা এমন কিছুকে অপছন্দ কর যা তোমাদের জন্য ভাল এবং ইহা সম্ভব যে তোমরা এমন কিছুকে পছন্দ কর যা তোমাদের জন্য ক্ষতিকর। আল্লাহ জানেন (তোমাদের জন্য কি ভাল এবং কি মন্দ) কিন্তু তোমরা জাননা। সুরাহ বাকারাহ ২:২১৬ সমস্ত ইবাদত একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার জন্য না হওয়া পর্যন্ত তিনি মু‘মিনদেরকে জিহাদ চালিয়ে যেতে বলেছেন: وَقَـتِلُوهُمْ حَتَّى لاَ تَكُونَ فِتْنَةٌ وَيَكُونَ الدِّينُ للَّهِ فَإِنِ انتَهَواْ فَلاَ عُدْوَنَ إِلاَّ عَلَى الظَّـلِمِينَ ২:১৯৩. তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাও যতক্ষণ কোন ফিতনাহ (অর্থাৎ শীরক, কুফরী) না থাকে এবং দ্বীন (সব ধরনের ইবাদত) পরিণত হয় একমাত্র আল্লাহর জন্য। কিন্তু তারা যদি ক্ষান্ত হয় তবে আয-যালিমুন (শীরককারী, অন্যায়কারী) ব্যতিত কারও বিরুদ্ধে যেন সীমা লঙ্গন না হয়। সুরাহ বাকারাহ ২:১৯৩
যারা আল্লাহ তা‘আলার শরীয়ত অনুযায়ী চলেনা তারা আসলে শয়তানের অনুসারী। দেখুন শয়তান কিভাবে আল্লাহ তা‘আলার নিকট দম্ভ করে এসেছে যে সে অবশ্যই আদম সন্তানদেরকে পথভ্রষ্ট করবে। আর তার অনুসারীদেরকে আল্লাহ তা‘আলা নিক্ষেপ করবেন জাহান্নামে যেখান থেকে তারা বের হতে পারবেনা। কাজেই শয়তানের প্রতারণার ব্যাপারে আজই সাবধান হয়ে যান। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন: لَّعَنَهُ اللَّهُ وَقَالَ لاّتَّخِذَنَّ مِنْ عِبَادِكَ نَصِيباً مَّفْرُوضاً ৪:১১৮. তাকে (শয়তানকে) আল্লাহ অভিশাপ করেছেন এবং সে বলেছিল, “আমি অবশ্যই আপনার বান্দাদের নির্ধারিত এক অংশ নিব (আমার অনুসারী হিসাবে)।“ وَلأضِلَّنَّهُمْ وَلأُمَنِّيَنَّهُمْ وَلاّمُرَنَّهُمْ فَلَيُبَتِّكُنَّ ءَاذَانَ الاٌّنْعَـمِ وَلاّمُرَنَّهُمْ فَلَيُغَيِّرُنَّ خَلْقَ اللَّهِ وَمَن يَتَّخِذِ الشَّيْطَـنَ وَلِيّاً مِّن دُونِ اللَّهِ فَقَدْ خَسِرَ خُسْرَاناً مُّبِيناً ৪:১১৯. “আর অবশ্যই আমি তাদেরকে পথভ্রষ্ট করবো এবং অবশ্যই আমি তাদের মধ্যে মিথ্যা আশা জাগিয়ে তুলবো এবং অবশ্যই আমি তাদেরকে আদেশ করবো যাতে সত্যিই তারা গবাদি পশুর কান কেটে দিবে এবং সত্যিই আমি তাদেরকে আদেশ করবো যাতে তারা আল্লাহর সৃষ্টির পরিবর্তন করবে।“ আর আল্লাহকে বাদ দিয়ে যারা শয়তানকে রক্ষক হিসাবে নেয় তাহলে সত্যই তারা স্পষ্ট ক্ষতিগ্রস্থ হয়। يَعِدُهُمْ وَيُمَنِّيهِمْ وَمَا يَعِدُهُمْ الشَّيْطَـنُ إِلاَّ غُرُوراً ৪:১২০ .সে তাদের নিকট প্রতিশ্রুতি দেয় এবং তাদের অন্তরে মিথ্যা আশা জাগায়। আর তাদের নিকট শয়তানের প্রতিশ্রুতি প্রতারণা ছাড়া কিছুই নয়। أُوْلَـئِكَ مَأْوَاهُمْ جَهَنَّمُ وَلاَ يَجِدُونَ عَنْهَا مَحِيصاً ৪:১২১. ঐ লোকেরা, তাদের বাসস্থান হবে জাহান্নাম। আর সেখান থেকে তারা মুক্তি পাবেনা। সুরাহ আন-নিসা ৪:১১৮-১২১
যারা তাগুতের জন্য লড়ে তারা কাফির! কাজেই তাগুতের পক্ষ ছেড়ে দিন এবং আল্লাহর জন্য লড়ুন। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন: فَلْيُقَاتِلْ فِى سَبِيلِ اللَّهِ الَّذِينَ يَشْرُونَ الْحَيَوةَ الدُّنْيَا بِالاٌّخِرَةِ وَمَن يُقَـتِلْ فِى سَبِيلِ اللَّهِ فَيُقْتَلْ أَو يَغْلِبْ فَسَوْفَ نُؤْتِيهِ أَجْراً عَظِيماً﴾ ৪:৭৪ অতএব তারা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করুক যারা দুনিয়ার জীবনকে পরকালের জন্য বিক্রয় করে। আর যে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করে সে নিহতই হোক অথবা জয়ীই হোক, আমরা তাকে বিশাল পুরস্কার প্রদান করবো। ﴿وَمَا لَكُمْ لاَ تُقَـتِلُونَ فِى سَبِيلِ اللَّهِ وَالْمُسْتَضْعَفِينَ مِنَ الرِّجَالِ وَالنِّسَآءِ وَالْوِلْدَنِ الَّذِينَ يَقُولُونَ رَبَّنَآ أَخْرِجْنَا مِنْ هَـذِهِ الْقَرْيَةِ الظَّـلِمِ أَهْلُهَا وَاجْعَلْ لَّنَا مِن لَّدُنْكَ وَلِيّاً وَاجْعَلْ لَّنَا مِن لَّدُنْكَ نَصِيراً ৪:৭৫ তোমাদের কি ব্যাপার যে তোমরা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করোনা যদিও পুরুষ, নারী ও শিশুদের মধ্যে অত্যাচারিতরা বলে, “হে আমাদের রাব্ব! আমাদেরকে বের করে আনুন এই শহর থেকে যার বাসিন্দারা জালিম এবং আমাদের জন্য আপনার পক্ষ থেকে একজন রক্ষক নিযুক্ত করে দিন এবং আমাদের জন্য আপনার পক্ষ থেকে একজন সাহায্যকারী নিযুক্ত করে দিন।“ لَّذِينَ ءَامَنُواْ يُقَـتِلُونَ فِى سَبِيلِ اللَّهِ وَالَّذِينَ كَفَرُواْ يُقَـتِلُونَ فِى سَبِيلِ الطَّـغُوتِ فَقَـتِلُواْ أَوْلِيَاءَ الشَّيْطَـنِ إِنَّ كَيْدَ الشَّيْطَـنِ كَانَ ضَعِيفاً ﴾ ৪:৭৬ যারা বিশ্বাস করে তারা যুদ্ধ করে আল্লাহর রাস্তায়। আর যারা কাফির তারা যুদ্ধ করে তাগুতের রাস্তায়। কাজেই শয়তানের বন্ধুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর। নিঃশ্চয়ই শয়তানের ষড়যন্ত্র দুর্বল। সুরাহ আন-নিসা ৪:৭৪-৭৬
আজ আপনারা কোথায়? আপনাদের কি হয়েছে? কেন দুনিয়াকে আটকে ধরে আছেন? কি জবাব দিবেন হাশরের দিনে? আল্লাহ তা‘আলা বলেছেনঃ وَمَا لَكُمْ لاَ تُقَـتِلُونَ فِى سَبِيلِ اللَّهِ وَالْمُسْتَضْعَفِينَ مِنَ الرِّجَالِ وَالنِّسَآءِ وَالْوِلْدَنِ الَّذِينَ يَقُولُونَ رَبَّنَآ أَخْرِجْنَا مِنْ هَـذِهِ الْقَرْيَةِ الظَّـلِمِ أَهْلُهَا وَاجْعَلْ لَّنَا مِن لَّدُنْكَ وَلِيّاً وَاجْعَلْ لَّنَا مِن لَّدُنْكَ نَصِيرا ৪:৭৫ তোমাদের কি ব্যাপার যে তোমরা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করোনা যদিও পুরুষ, নারী ও শিশুদের মধ্যে অত্যাচারিতরা বলে, “হে আমাদের রাব্ব! আমাদেরকে বের করে আনুন এই শহর থেকে যার বাসিন্দারা জালিম এবং আমাদের জন্য আপনার পক্ষ থেকে একজন রক্ষক নিযুক্ত করে দিন এবং আমাদের জন্য আপনার পক্ষ থেকে একজন সাহায্যকারী নিযুক্ত করে দিন। সুরাহ আন-নিসা ৪:৭৫